আনিস তপন, মোস্তাফিজুর রহমান: [৩] উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বাসমতি ছাড়া অন্য সব চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত। বৃহস্পতিবার দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে। সূত্র: রয়টার্স

[৪] বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের সরবরাহ স্থিতিশীল রাখতে এবং অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে চাল রপ্তানি নীতিতে পরিবর্তন এনেছে সরকার।

[৫] বিশ্বের প্রায় ৩০০ কোটি মানুষের প্রধান খাদ্য ভাত এবং ভারত বৈশ্বিক রপ্তানির ৪০ শতাংশ একাই পূরণ করে। স্বাভাবিকভাবেই ভারতের এই রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা বিশ্ববাজারে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

[৬] সরকারের চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে ভারতের চাল রপ্তানিকারীদের সংস্থা রাইস এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশন। এই সংস্থার সভাপতি বি. ভি. কৃষ্ণা রাও বলেন, রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর গমের আন্তর্জাতিক বাজার যেভাবে এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল, কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের কারণে চালের আন্তর্জাতিক বাজারে তার চেয়েও বড় বিপর্যয় দেখা দেবে।

[৭] কৃষ্ণা রাও বলেন, হঠাত করে চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা ক্রেতাদের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে, কারণ তারা এত কম সময়ের মধ্যে অন্য দেশ থেকেও চাল আনতে পারবে না।

[৮] রাও আরো বলেন, অনেক দেশ হয়তো নয়াদিল্লিকে শিপমেন্ট পুনরায় সচল করার জন্য আহ্বান জানাবে। ভারত থেকে চাল কেনার ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে বেনিন, সেনেগাল, আইভরি কোস্ট, টোগো, গিনি, বাংলাদেশ এবং নেপাল।

[৯] এ ব্যাপারে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক এক ব্যবসায়ী হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, রপ্তানি বাজারে চালের দাম বাড়তে যাচ্ছে। আমরা ধারণা করছি, টনপ্রতি ৫০ ডলার থেকে ১০০ ডলার বা তারও বেশি দাম বাড়বে।

[১০] এই পরিস্থিতিতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক দেশ থাইল্যন্ডের রপ্তানিকারকরা নতুন মূল্য নির্ধারণের জন্য অপেক্ষা করছে। 

[১১] থাই চাল রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সম্মানসূচক সভাপতি কুকিয়াত ওফাসওংসে রয়টার্সকে বলেন, কিছু ব্যবসায়ী আশা করছেন, টনপ্রতি দাম ৭০০ ডলার থেকে ৮০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে। ভারতের চালের দাম পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪২৮ ডলারে উঠেছিল এবার।

[১২] এর আগে বাংলাদেশে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রথম দফায় গত ৩০ জুন বেসরকারিভাবে চার লাখ নয় হাজার টন সেদ্ধ ও আতপ চাল আমদানির জন্য ৯৫টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিল খাদ্য মন্ত্রণালয়। এরপর গত ৪ জুলাই দ্বিতীয় দফায় ১২৫টি প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ ৪৬ হাজার টন, তৃতীয় দফায় গত ৭ জুলাই ৬২টি প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ ৮২ হাজার টন সেদ্ধ ও আতপ চাল আমদানির জন্য অনুমতি দিতে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। সূত্র: বাংলা নিউজ ২৪

[১৩] এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন আমাদের নতুন সময়কে বলেন, ক্রয় কমিটি সরকার থেকে ৫ লাখ টন চালের অনুমোদন নিলেও সেটি আমরা এখনই কিনবো এমন নয়। ভারতের চাল রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আমাদের এখানে প্রভাব ফেলবে না যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে না করে। আমাদের উৎপাদন ভালো এবং সরকারি-বেসরকারি প্রস্তুতি আছে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব